





মিররলেস ক্যামেরা:
মিররলেস ক্যামেরা মানে সোজা কথায় যে ক্যামেরায় ‘মিরর’ নেই। ডিএসএলআর ক্যামেরায় ত্রিভুজ আকৃতির মিরর রয়েছে, যাতে তোলা ছবি প্রথম দেখা যায়। কিন্তু মিররলেস ক্যামেরায় সরাসরি স্ট্ক্রিনে দেখা যায়। এতে তোলা ছবি দেখার জন্য মিররের প্রয়োজন নেই। তবে ডিএসএলআর ক্যামেরার সঙ্গে মিররলেসের মূল পার্থক্য হচ্ছে- মিররলেস ক্যামেরা ডিএসএলআর-এর চেয়ে ওজনে বেশ হালকা, এটি আরও কার্যকর এবং উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন। মিররলেসে যুক্ত হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি। ফলে এতে ধারণ করা ছবি ও ভিডিও হয়ে উঠছে আরও প্রাণবন্ত। ডিএসএলআর’র চেয়ে মিররলেসের ভিডিও কোয়ালিটি অনেক ভালো। ফলে ছবি তোলার পাশাপাশি ভিডিওগ্রাফির জন্য ব্যবহারকারীদের প্রথম পছন্দ হয়ে উঠছে মিররলেস ক্যামেরা।
একই কনফিগারেশনের হলেও দামের দিক থেকে মিররলেস সাশ্রয়ী। এ সম্পর্কে দেশে ক্যানন পণ্যের পরিবেশক জেএএন অ্যাসোসিয়েটসের মহাব্যবস্থাপক (আইসিপি সার্ভিস) এস এম আহসান হাবিব সমকালকে বলেন, একই কনফিগারের যে ডিএসএলআর ক্যামেরা কেনা যাবে ১ লাখ ৩০/৩৫ হাজার টাকায়, মিররলেস হলে সেটি কেনা যাবে ১ লাখ টাকার মধ্যে। মিররলেস ক্যামেরা ছোট ও হালকা হওয়ায় সহজে বহনযোগ্য, এটি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন এবং সাশ্রয়ী। আর এ কারণেই সনি ও নাইকনের মতো বিশ্বখ্যাত ক্যামেরা নির্মাতারা ডিএসএলআর ক্যামেরা তৈরি ইতোমধ্যে বন্ধ করে দিয়েছে। ক্যানন পুরোপুরি বন্ধ না করলেও ডিএসএলআর তৈরির হার কমিয়ে দিয়েছে। আহসান হাবিব জানান, বাজারে প্রফেশনাল ব্র্যান্ড নিউ ক্যামেরার ৭০ শতাংশই এখন মিররলেসের দখলে। আর ৩০ ভাগ দখলে আছে ডিএসএলআর ক্যামেরার।
সেরা মিররলেস ক্যামেরা মানে সেরা স্পেসিফিকেশনসহ ক্যামেরা। প্রয়োজনীয় মিররলেস ক্যামেরা নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করে সেন্সরের আকার। কয়েকটি সহজলভ্য আকারের সেন্সর হলো- মাইক্রো ফোর থার্ডস, এপিএস-সি, ফুল ফ্রেম ও মিডিয়াম ফরম্যাট। স্থিরচিত্র কিংবা ভিডিও উভয় শুটের জন্য এ তালিকার প্রতিটি ক্যামেরাই দক্ষ। তবে কয়েকটিতে সর্বোৎকৃষ্ট ফুটেজের জন্য ইন-বডি স্ট্যাবিলাইজেশন, কালার গ্রেডিংয়ের জন্য পেশাদার ‘লগ’ মোড এবং উচ্চ ফ্রেম রেট বা ক্যাপচার কোয়ালিটি রয়েছে। দারুণ এসব বৈশিষ্ট্য ভিডিও, ব্লগিং কিংবা সিনেমার শুটিংয়ের জন্য ব্যবহারকারীকে অসাধারণ অভিজ্ঞতা দেবে। তবে সাধ এবং সাধ্যের সমন্বয় ঘটিয়ে আপনাকে বেছে নিতে হবে প্রয়োজনের সেরা মিররলেস ক্যামেরাটি।
ডিজিটাল ক্যামেরা নির্বাচন করার ক্ষেত্রে ডিজিটাল ক্যামেরা ও মিররলেস ক্যমেরা কোনটি বেস্ট এরমধ্যে পার্থক্য কি অনেক সময় দ্বিধার মধ্যে পরতে হয়। এক পলক দেখে নেওয়া যাক মিররলেস ক্যমেরা ও ডিএসএলআর এর মধ্য পার্থক্য কি?
অটো ফোকাস স্পীড:
অটো ফোকাসের স্পীড শনাক্ত করণ করার জন্য মিররলেস ক্যামেরা ও ডিএসএলআর ক্যামেরার ভূমিকা প্রায় সমান। ডিএসএলআর এর এখানে সুবিধা হল দ্রুত ফেজ শনাক্ত করতে পারে। মিররলেস ক্যামেরা কনট্রাস্ট শনাক্ত করার জন্য এক ধরনের সেন্সর ব্যবহার করা হয় যা কম আলোতে ও ফেজ শনাক্ত করণ করতে পারে।
প্রি-ভিউইমেজ:
ইমেজপ্রি-ভিউ এর জন্য ডিএসএলআরে এক ধরনের অপটিক্যাল ভিউফাইন্ডার সেন্সর থাকে যা ক্যামেরা দিয়ে ছবি ক্যাপচার করতে সহায়তা করে। মিররলেস ক্যামেরার মধ্যেই লেকট্রিকভিউফাইন্ডার থাকে যা অপটিকালভিউফাইন্ডারের মত কাজ করে।
ইমেজ স্থিতিশীলতা:
বেশিরভাগ আধুনিক ক্যামেরাগুলো ছবি ক্যাপচার করতে গেলে সামান্য পরিমান সময় নিয়ে থাকে। ডিএসএলআর এর ক্ষেত্রে ইমেজ স্থিতিশীলতা শাটারের গতির ওপর নির্ভর করে। শাটারের গতি যত বেশি হবে ইমেজ স্থিতিশীলতাও তত বেশি হবে। বেশির ভাগ মিররলেস ক্যামেরায় শাটার থাকে না তাই ইমেজ স্থিতিশীলতা অনেক কম হয়।
ইমেজ কোয়ালিটি:
ডিএসএলআর ও মিররলেস ক্যামেরা দিয়ে হাইরেজ্যুলেশনের ছবি তোলা যায়। বর্তমানের মিররলেস ক্যামেরায় উচ্চমানের ইমেজ সেন্সর ব্যবহার করা হয় ফলে ছবি তোলার জন্য যথেষ্ঠ পরিমাণে আলো ক্যাপচার করতে পারে। ডিএসএলআরে এপিএস-সিআকারেরসেন্সর থাকে ফলে ছোট আকারের আলো ক্যাপচার করতে পারে।
ভিডিও এর ধরন:
মিররলেস ক্যামেরা ও ডিএসএলআর এর মধ্যে প্রধান পার্থক্য হল ভিডিওর অটো ফোকাস। সাধারণত, মিররলেস ক্যামেরায় অন-চিপফেজ-ডিটেকশন ফোকাস সেন্সর বেশি থাকায় এর সুবিধা বেশি। ডিএসএলআর ভিডিও রেকর্ডিংয়ের সময় মিরর আপেরস্টেজের সাথে শনাক্ত করতে পারে না।
শুটিংগতি:
ডিজিটাল ক্যামেরার শাটারের গতির অপর নির্ভর করে শুটিং গতির ওপর। উভয় ক্যামেরায় খুব উন্নত প্রযুক্তির শাটার ব্যবহার করা হয়েছে বিধায় খুব দ্রুতই মেজক্যাপচার করতে পারে। মিররলেস ক্যামেরায় আলাদা ভাবে লেন্স না থাকলেও যান্ত্রিক শাটার ব্যবহার করে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। শুটিং করার জন্য সবচেয়ে ভালো মিররলেস ক্যামেরা। এর রেজ্যুলেশন তুলনা মূলক অন্যান্য ক্যামেরার চেয়ে বেশি থাকে।